সংবাদ শিরোনাম
ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের আলোচনা সভায় বক্তারা অনতিবিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন চালু এবং দায়ীদের গ্রেপ্তার করুন 

ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের আলোচনা সভায় বক্তারা অনতিবিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন চালু এবং দায়ীদের গ্রেপ্তার করুন 

ভাসানী চর্চা কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়োজিত ফারাক্কা লং মার্চের ৪৫ তম বার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিন গত ২৬ মার্চ মৌলবাদী সংগঠন হেফাজত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তান্ডব চালিয়েছে তা একাত্তরকেও হার মানিয়েছে। হেফাজতিরা ঠুনকো অজুহাতে সেদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে স্টেশনটিকে পুড়িয়ে দিয়ে জাতীয় সম্পদ ধ্বংসের পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীকে যে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে এর দায়দায়িত্ব তাদেরকেই বহন করতে হবে । বক্তারা  স্টেশনটির  প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত পুনরায় চালু করার জন্য জোর দাবি জানান । সেই সাথে যারা জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করে জনদুভোর্গ সৃষ্টি করেছে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টসহ ঘটনার নেপথ্যের ইন্ধনদাতা জেলা হেফাজতের সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহসহ  জেলা হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি জোরদাবি জানান বক্তারা ।তারা হেফাজতের তান্ডবের সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফেসবুক পেজে উস্কানিদাতাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা ।
বক্তারা বলেন,সরকার দুধকলা দিয়ে হেফাজত নামক কালসাপকে এতদিন পুষে আসছে ।আজ তারাই ফনা তুলে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়াই নয় দেশের  বিভিন্ন স্থানে নারকীয় তান্ডব চালিয়ে তাদের শক্তিমত্তার জানান দিয়ে এটাই প্রমাণ করেছে যে এরা কালসাপ । তারা সময় মতো ঠিকই ফনা তুলে  ছোবল মারে ।বক্তারা বলেন,মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বর্তমান সরকার যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় থাকার লোভেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মৌলবাদী সংগঠন হেফাজতের সাথে আপসকামী আচরণ করে তাদেরকে আজ নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে ।সরকার মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও কার্যত তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজে লিপ্ত। বক্তারা বলেন,সরকার ’৭২এর সংবিধান মোতাবেক দেশ পরিচালনা করলে সাম্প্রদায়িক শক্তি হেফাজত এভাবে মাথা তুলতে পারতো না। বাহাত্তরের সংবিধান কার্যকর হলে হেফাজতসহ কোন ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক শক্তির রাজনীতির  সুযোগ থাকতো না। বক্তারা সাম্প্রতিক হেফাজতি তান্ডবের সময় স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্পষ্ট ও দৃঢ় ভূমিকার জন্য প্রশংসার দাবিদার হলেও জেলা পর্যায়ের একাধিক নেতৃবৃন্দের হেফাজতের সাথে সখ্যতাও সমালোচনার দাবি রাখে। সভা থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের দাখিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা রেকর্ডভুক্ত না করায়  সরিষায় যে ভূত আছে এটাই প্রমাণ হয়েছে।
বক্তারা বলেন,ভারতের পশ্চিম বঙ্গের ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে গঙ্গার পানি একতরফাভাবে  প্রত্যাহারের প্রতিবাদে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী দেশের জনগণকে নিয়ে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা অভিমুখে লং মার্চ করেছিলেন। দীর্ঘ ৪৫ বছরে ফারাক্কার প্রভাবে বাংলাদেশের উত্তর এবং দক্ষিণ পশ্চিমাংশে এর বিরূপ প্রভাবে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে । মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর ফারাক্কা বাঁধবিরোধী আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। তাই বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই দেশপ্রেমিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে হবে । বক্তারা গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা,তিস্তাসহ অভিন্ন নদীসমূহের পানি আন্তজার্তিক আইন অনুযায়ী বন্টনের জোর দাবি জানান ।
ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের সংগঠক আবদুন নূর এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার হোসেন সাঈদ, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তফছির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল বণিক,জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, জেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী,জেলা তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোঃ নাসির, ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অসীম কুমার বর্দ্ধন, জেলা কৃষক-খেত মজুর সমিতির সভাপতি আবদুস সোবহান মাখন, জেলা ঐক্য ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক এনাম, জেলা যুব মৈত্রীর সদস্য সচিব ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, জেলা ছাত্রমৈত্রীর নেতা মহুয়ী শারদ, জেলা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com